Saturday, January 2, 2021

সূরা আল-ওয়াকিয়াহ শুধুই বাংলা অর্থ

যখন কিয়ামতের ঘটনা ঘটবে,যার বাস্তবতায় কোন সংশয় নেই।এটা নীচু করে দেবে, সমুন্নত করে দেবে।যখন প্রবলভাবে প্রকম্পিত হবে পৃথিবী।এবং পর্বতমালা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে। অতঃপর তা হয়ে যাবে উৎক্ষিপ্ত ধূলিকণা। এবং তোমরা তিনভাবে বিভক্ত হয়ে পড়বে।যারা ডান দিকে, কত ভাগ্যবান তারা।এবংযারা বামদিকে, কত হতভাগা তারা।অগ্রবর্তীগণ তো অগ্রবর্তীই।তারাই নৈকট্যশীল,অবদানের উদ্যানসমূহে,তারা একদল পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে।এবং অল্পসংখ্যক পরবর্তীদের মধ্যে থেকে।স্বর্ণ খচিত সিংহাসন।তারা তাতে হেলান দিয়ে বসবে পরস্পর মুখোমুখি হয়ে।তাদের কাছে ঘোরাফেরা করবে চির কিশোরেরা।পানপাত্র কুঁজা খাঁটি সূরাপূর্ণ পেয়ালা হাতে নিয়ে,যা পান করলে তাদের শিরঃপীড়া হবে না এবং বিকারগ্রস্ত হবে না। আর তাদের পছন্দমত ফল-মুল নিয়ে, এবং রুচিমত পাখীর মাংস নিয়ে তথায় থাকবে আনতনয়ানা হুরগন,অবরণে রক্ষিত মোতির ন্যায় এবং রুচিমত পাখিরা মাংস নিয়ে ৷তথায় থাকবে আআনতনয়না,হুরগগন, আবরণে রক্ষিত  মোতির  ন্যায়,তারা যা কিছু করত ,তার পুরস্কারস্বরূপ তারা তথায় অবান্তর ও কোন খারপ কথা শুনবে না৷ কিন্তু শনবে সালাম আর সালাম ৷যারা ডান দিকে থাকবে তারা কত ভাগ্যবান ৷তারা থাকবে কাটাবিহীন বদরিকা বুক্ষে ৷এবং কাদি কাদি কল৷য় ,এবং দীর্ঘ ছায়ায়৷ এবং প্রবাহিত পানিতে ,ও প্রচুর ফল-মূলে ,যা শেষ হবার নয় এবং নিষিদ্ধ ও নয়, আর থাকবে সমুন্নত শয়্যায় ৷আমি জান্নাতি রমণীগনকে বিশেষরূপে সৃষ্টি করেছি৷ অতঃপর তাদেরকে করেছি চিরকুমারি৷ কামিনী ,সসমবয়সস্কা৷ ডান দিকের লোকদের জন্যে ৷তাদের একদল হবে পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে৷ এবং একদল পরবর্তীদের মধ্য থেকে৷ বামপার্শ্ববস্থ লোক, কত না হতভাগা তারা ৷তার থাকে প্রখর বাষ্পে এবং উত্তপ্ত পানিতে ,এবং ধুম্রকুঞ্জের ছায়ায় ৷ যা শীতল নয় এবং আরামদায়কও নয় ৷তারা ইতিপূর্বে স্বাচ্ছন্দ্যশীল ছিল ৷ তারা সদাসর্বদা ঘোরতর পাপ কর্মে ডুবে থাকত ৷তারা বলতঃ আমরা যখন মরে অস্থথি ওমৃত্তিকায় পরিণত হয়ে যাব ,তখনও কি পুনরুত্থিত হব ? এবং আমাদের পূর্বপুরুষগণও !বলুনঃ পূর্ববর্তী ওপরবর্তীগণ ,সবাই একত্রিত হবে এক নির্দিষ্ট দিনের নির্দষ্ট সময়ে ৷অতঃপর হে পথভ্রষ্ট, মিথ্যারোপকারীগণ তোমরা অবশ্যই ভক্ষণ করবে যাক্কুম বৃক্ষ থেকে ,অতঃপর তা দ্বারা উদর পূর্ণ করবে ,অতঃপর তার উপর পান করবে উত্তপ্ত পানি৷পান করবে পিপাসিত উটের ন্যায়৷ কিয়ামতের দিন এটাই হবে তাদের আপ্যায়ন ৷ আমি সৃষ্টি করেছি তাদেরকে ৷অতঃপর কেন তোমরা তা সত্য বলে বিশ্বাস করনি৷ তোমরা কি ভেবে দেখেছ ,তোমাদের বীর্যপত  সম্পর্কে ৷তোমরা তাকে সৃষ্টি কর ,না আমি সৃষ্টি করি ?আমি তোমাদের মৃত্যুকাল নির্ধারিত করেছি এবং আমি অক্ষম নই ৷এ ব্যাপারে যে তোমাদের পরিবর্তে তোমাদের মত লোককে নিয়ে আসি  এবং তোমাদেরকে এমন করে দেই , যা তোমাদের জান না তোমরা অবগত হয়েছ প্রথম সৃষ্টি সম্পকে,তবে তোমরা অনুধাবন কর না কেন ?তোমরা যে বীয বপন কর ,সে সম্পকে ভেবে দেখেছ কি? তোমরা তাকে উৎপন্ন কর ,না আমি উৎপন্নকারী? আমি ইচ্ছা করলে তাকে খড়কুটা করে দিতে পারি ,অতঃপর হয়ে যাবে তোমরা বিস্ময়াবিষ্টা বলবো আমরা তো ঋণের চাপে পড়ে গেলাম ;বরং হূত সর্বস্ব হয়ে পড়লাম ৷ তোমরা যে পানি  পান কর ,সে সম্পকে ভেবে দেখেছ কি? তোমরা তা মেঘ থেকে নামিয়ে আন ,না আমি বর্ষন করি ? আমি ইচ্ছা করলে তাকে লোনা করে দিতে পারি ,অতঃপর তোমরা কেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না তোমরা যে অগ্নি প্রজ্জ্বলিত কর, সে সম্পকে ভেবে দেখেছ কি ?তোমরা কি এর বৃক্ষ সৃষ্টি করেছ না আমি করেছি ?আমি সেই বৃক্ষকে করেছি স্মরণিকা এবং মরুবাসীদের জন্ম সামগ্রী৷ অতএব আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামে পবিত্রতা ঘোষণা করুন৷ অতএব ,আমি তারকারাজির অস্তাচলের শপথ করছি ,নিশ্চয় এটা এক মহা শপথ –দি তোমরা জানতে ৷ নিশ্চয় এটা সম্মানিত কোরআন ,যা আছে এক গোপন কিতাবে ,যারা পাক পবিত্র ,একে সপ্র্শ করবে না ৷এটা বিশ্ব-পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ৷ তবুও কি তোমরা এই বাণীর প্রতি শৈথিল্য পদর্শন করবে? এবং একে মিথ্যা বলাকেই তোমরা তোমাদের ভূমিকায় পরিণত করবে? অতঃপর যখন কারো প্রাণ কন্ঠাগত হয় ৷ এবং তোমরা তাকিয়ে থাক ,যখন আমি তোমাদের অপেক্ষা তার অধিকার নিকটে থাকি কিন্তু তোমরা দেখনা ৷যদি তোমাদের হিসাব-কিতাব না হওয়াই ঠিক হয়, তবে তোমরা এই আপ্মাকে ফিরাও না কেন ,যদি তোমরা সত্যবাদী হও? যদি সে নৈকট্যশীদের একজন হয়; তবে যার জন্মে আছে সুখ উত্তম রিযিক এবং নেয়ামতে ভরা উয্যান ৷ আর যদি সে ডান পার্শ্বস্থদের একজন হয়, তবে তাকে বলা হবেঃ তোমার জন্মে ডানপার্শ্বসস্থদের পক্ষ থেকে সালাম ৷ আর যদি সে পথভ্রষ্ট মিথ্যারোপকারীদের একজন হয় ,,তবে তার আপ্যায় হবে উত্তপত পানি দ্ববারা ৷এবং সে নিক্ষিপ্ত হবে অগ্নিতো ৷এটা ধ্রুব সত্য৷ অতএব আপনি আপনার মহান পালনর্তার নামে পবিত্রতা ঘোষণা করুন৷

 


Saturday, December 12, 2020

 ইসলামিক শিক্ষামূলক ঘটনাhttps://islamictvbdjoynal.blogspot.com মুআবিয়া (রাঃ) এর তাহাজ্জুদ নামায প্রিয়নবীজীর (সাঃ ) বদান্যতা

হাকীমুল উম্মত হযরত মাওলানা থানবী (রহ.) হযরত মুআবিয়া (রা.)এর একটি ঘটনা লিখেছেন।

হযরত মুআবিয়া (রা.)-এর অভ্যাস ছিল, তিনি দৈনন্দিন নিয়মিত ঘুম থেকে উঠে তাহাজ্জুদ নামায আদায় করতেন। এক রাতে গভীর ঘুমে চোখ খােলেনি এমন কি তাহাজ্জুদের ওয়াক্ত শেষ হয়ে গেল। ইতিপূর্বে কখনও তাহাজ্জুদ ছুটেনি। প্রথমবারের মত তাহাজ্জুদ নামায ছুটে যাওয়ায় সাংঘাতিক ব্যথিত লজ্জিত হলেন।

দুশ্চিন্তা পেরেশানীতে সারাদিন কাঁদলেন। শুধু আফসােস করে বলতে লাগলেন হে আল্লাহ! আজ আমার তাহাজ্জুদ ছুটে গেছে।

পরের রাত তাহাজ্জুদের ওয়াক্তে এক ব্যক্তি এসে তাঁকে তাহাজ্জুদের জন্য জাগাতে আরম্ভ করল। হযরত মুআবিয়া (রা.) ঝটপট উঠে আগন্তুক ব্যক্তিটিকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কে? এখানে কিভাবে এসেছেন?

উত্তরে সে বলল আমি ইবলিস শয়তান। হযরত মুআবিয়া বলেন, তােমার কাজ মানুষকে গাফেল রাখা, নামাযের জন্য উঠিয়ে তােমার লাভ কি? শয়তান বলল প্রসঙ্গ বাদ দিন জলদি গিয়ে তাহাজ্জুদ আদায় করে আপনার কাজে লেগে যান।

মুআবিয়া | (রা.) বললেন, আগে তােমাকে বলতে হবে কারণটা কি? কেন আমাকে জাগিয়ে তুললে? যতক্ষণ পর্যন্ত বলবে না ততক্ষণ আমি তােমাকে ছাড়বাে। না। বারবার পীড়াপীড়ি করার পর শয়তান বললাে,

আমার কাজ তাে মূলত আপনি যা বলেছন তাই। গত রাতে আমি আপনাকে এমন অলসতা দিয়েছি যে আপনার তাহাজ্জুদ ছুটে গেছে। আপনি তাহাজ্জুদ পড়তে পারেন নি। কিন্তু তাহাজ্জদ ছুটে যাওয়ার পরিণতিতে আপনি সারাদিন আফসােস আর কান্নাকাটি করছেন।

এই রােনাজারিতে আপনার মর্তবা এমন বৃদ্ধি পেয়েছে যদি আপনি তাহাজ্জুদ পড়তেন তবে সে স্তরে উন্নীত হতে পারতেন না। এটা তাে আমার জন্য বড়ই লােকসানের কাজ। এজন্য আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আপনাকে তাহাজ্জুদের জন্য জাগিয়ে দেব যাতে মর্তবা বুলন্দির রাস্তা পয়দা না হয়।

 

ইসলামিক ঘটনা ০২

প্রিয়নবীজী (সাঃ) এর বদান্যতা।

নবীজী (সা.)-এর প্রিয় সাহাবী হযরত জাবের রাযি. এর ঘটনা। তাঁর সাথে নবীজীর বিশেষ সম্পর্ক ছিল। গাযওয়ায়ে বনীল মুসতালেক থেকে ফিরে আসার সময় তাঁর রুগ্ন উট চলতে চলতে থেমে পড়ছিল খুব ধীরপদে পথ চলছে।

তাকে দ্রুত হাঁকানাের চেষ্টায় কমতি ছিল না। কিন্তু ক্লান্ত শ্রান্ত উটটি আর পারছে না। কাফেলার সবাই আগে চলে যাচ্ছে আর তিনি পিছনে থেকে যাচ্ছেন। বারবার তাকে পেছনে পড়তে দেখে হুযুর পাক (সা.)-তার কাছে গিয়ে বললেন, তুমি কাফেলার সাথে না চলে পেছনে কেন? উত্তরে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ (সা.) আমার উট চলতে পারছে না আমি তাকে দ্রুত চালানাের খুব চেষ্টা করছি; কিন্তু সে পিছে থেকে যাচ্ছে।

হুযুর আকরাম (সা.) নিকটের এক ঝাড় থেকে একটি ডাল ভাঙলেন এবং তা দিয়ে মৃদু আঘাত করলেন। হুযুর পাক (সা.) ছড়ি মারতেই বাহন উটটি বাতাসে গতি ফিরে পেল। এমন কি সবাইকে ছেড়ে কাফেলার অগ্রভাগে অতিদ্রুত চলতে থাকে।

প্রিয় নবীজী আবার তার কাছে গিয়ে বললেন, তােমার উট দেখছি খুব দ্রুতগামী। হযরত জাবের (রা.) বললেন, ইয়া হাবীবাল্লাহ এটা আপনার বরকত। হুজুর (সা.) পুনরায় বললেন, তােমার এমন সুন্দর উটটি আমার কাছে বিক্রি করবে? জাবের (রা.) বললেন, বেচার কি দরকার আপনার পছন্দ হলে আমার পক্ষ থেকে হাদিয়া গ্রহণ করুন।

নবীজী বললেন, হাদিয়া হিসেবে নয় আমি মূল্য দিয়ে কিনতে চাই। বেচতে চাইলে বেচতে পার। হযরত জাবের (রা.) বললন, কিনতে চাইলে আপনার যা কিছু মনে চায় দাম ধরে নিয়ে নিন। নবীজী বললেন, তা হয় না তুমিই দাম বলে দাও কত দামে বিক্রি করবে। জাবের (রা.) বললেন এক আউকিয়া রূপার বিনিময়ে বিক্রি করতে চাইআনুমানিক চল্লিশ দিরহাম সমপরিমাণ হবে।

নবীজী বললেন, তুমি বেশ দাম হেকেছাে তা দিয়ে হৃষ্ট পুষ্ট বড় উট কেনা যায়। হযরত জাবের (রা.) বললেন, ইয়া রসূলুল্লাহ আপনি যে দামে মন চায় নিয়ে নিন। প্রিয় বাসল (সা.) বললেন, ঠিক আছে আমি এক আউকিয়া দিয়ে বাকিতে ক্রয় করলাম, মদীনায় গিয়ে তােমার মূল্য পরিশােধ করবাে।

এরপর উট থেকে নেমে পড়লেন হযরত জাবের (রা.) নবীজী (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, নামলে কেন? জাবের (রা.) বললেন এটা তাে আপনি কিনে নিয়েছেন এখন আপনার উট প্রিয় নবীজী বললেন, তুমি কি মদীনা পর্যন্ত হেঁটে যাবে? আচ্ছা ঠিক আছে মদীনা পর্যন্ত তুমি উটের পিঠে চড়ে যাও; মদীনায় গিয়ে তােমার উটের মূল্য পরিশােধ করে তােমার থেকে উট বুঝে নেব।

মদীনায় পৌছে হযরত জাবের (রাযি.) নবীজী (সা.)-এর নিকট উটটি পাঠিয়ে দিলেন। কিন্তু প্রিয় হাবীব (সা.) উটটিও তাকে ফেরত দিলেন এবং উটের মূল্যও পরিশােধ করে দিলেন। অর্থাৎ এক আউকিয়া রূপা তাঁকে দিয়ে দেন। মূলত এটা ছিল এক বাহানা মাত্র।

* প্রিয় নবীজী সখ্যতাভাব বজায় রাখার তালীম উম্মতের জন্য উপস্থাপন করলেন।